বর্তমানে আমরা তথ্য প্রযুক্তির যুগে বসবাস করছি। দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেমন নানাভাবে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করছি ঠিক একইভাবে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ব্যবহার করছি। আজ আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো।
ডিজিটাল কি
ডিজিটাল প্রযুক্তি কি সম্পর্কে জানার আগে চলুন আমরা একটু ডিজিটাল কি সে সম্পর্কে জেনে নেই। ডিজিটাল বলতে ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তিকে কে বোঝায় যা ডাটা তৈরি করা, ডাটা স্টোর করা এবং প্রক্রিয়া করাকে বোঝায়।
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ডাটাকে ০ এবং ১ দ্বারা প্রকাশ এবং স্টোর করা হয়। গননার এই সিস্টেমকে বাইনারি সিস্টেম হিসেবেও পরিচিত। ডিজিটাল প্রযুক্তির আগে ইলেক্ট্রনিকস ট্রান্সমিশন এনালগের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো।
ডিজিটাল প্রযুক্তি কি
ডিজিটাল প্রযুক্তি কি ডিজিটাল প্রযুক্তি হলো এমন কিছু ইলেকট্রনিক টুলস, ডিভাইস বা সিস্টেম যেগুলো ডাটা প্রসেস বা স্টোর করার সময় ব্যবহার করে এবং অন্যান্য ফাংশন সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে কর্মীদের প্রডাক্টিভিটি এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
যদি কিছু উদাহরণ দেই তাহলে বলা যায় ডিজিটাল ক্যামেরা, ব্যক্তিগত কম্পিউটার এবং সেই সকল ডিভাইস যেগুলো দ্রুততার সাথে ডাটা ট্রান্সমিশন করে ডাটা স্টোর এবং প্রসেস করতে পারে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তথ্য প্রযুক্তি যা কম্পিউটারের মাধ্যমে ডাটা এবং তথ্যকে প্রসেস করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা উন্নত করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেন।
বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল প্রযুক্তি
বর্তমানে আমরা বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি। প্রায় ৩০এরও বেশি ধরনের ডিজিটাল প্রযুক্তি রয়েছে আমরা আমি এখানে অগ্রাধিকার ক্রমে কিছু ডিজিটাল প্রযুক্তি তুলে ধরছি। তাহলে আপনারা ডিজিটাল প্রযুক্তি কি এ সম্পর্কে আরো পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারবেন।
বিজনেস টেকনোলজি: বিজনেস টেকনোলজির মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে কাস্টমারদের আরো ভালো সার্ভিস দিতে পারে। এতে করে তাদের ব্যবসা আরো উন্নত হতে পারে। বিজনেস টেকনোলজির মধ্যে রয়েছে তথ্য প্রযুক্তি, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা ম্যানেজমেন্ট এবং ই-কমার্স প্রযুক্তি।
ইনফরমেশন টেকনোলজি: ইনফরমেশন টেকনোলজি হলো একটি বিশাল প্রফেশনাল ক্যাটাগরি। যার মধ্যে রয়েছে যোগাযোগ, নেটওয়ার্ক তৈরি, ডাটা ও তথ্যের সুরক্ষা এবং কম্পিউটারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা। ডিজিটাল প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো ইনফরমেশন টেকনোলজি। এটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন তথ্য প্রযুক্তি কি
কমিউনিকেশন টেকনোলজি: তথ্য ও যোগাযোগের সংমিশ্রণ হিসাবে, কমিউনিকেশন টেকনোলজি ব্যবহারকারী এবং ডিভাইসগুলির মধ্যে ডিজিটাল যোগাযোগের জন্য নেটওয়ার্কগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। কয়েকটি উদাহরণ দিলে আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে যেমন সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক, ব্লুটুথগুলো হলো কমিউনিকেশন টেকনোলজির উদাহরণ।
অপারেশনাল টেকনোলজি: অপারেশনাল টেকনোলজি হলো হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের একটি শক্তিশালী সংমিশ্রণ। এগুলো একটি কোম্পানিকে তাদের শিল্পে ব্যবহৃত নেটওয়ার্কগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম করে তোলে।
আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্ট: আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্ট বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের জীবনকে আপগ্রেড এবং প্রসারিত করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্ট এর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে সেল্ফ ড্রাইভিং অর্থাৎ গাড়ি নিজে নিজেই চলার প্রযুক্তি।
এডুকেশন টেকনোলজি: EdTech বা এডুকেশন টেকনোলজি হলো এমন কিছু বিষয় যার মাধ্যমে এডুকেশন সেক্টরগুলো ব্যাপক উন্নত হয়েছে। যেমন বর্তমানে আমরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারি, ইউটিউবের মাধ্যমে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি।
ব্লকচেইন টেকনোলজি: ব্লকচেইন টেকনোলজি আমাদের এনক্রিপ্ট করা ডাটা সহ একটি নিরাপদ ওয়েব-ভিত্তিক ফিনান্সিয়াল সিস্টেম অফার করে। প্রাথমিকভাবে এটি ডিজিটাল সম্পদগুলো ব্যবহার করার জন্য এটি ডিজাইন করা হয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে এটি এর বাইরেও ব্যাপক প্রসারিত হয়েছে। অনলাইন স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই প্রযুক্তিটি দ্রুত ব্যবহার জন্য একটি অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
ডিজিটাল টেকনোলজির গুরুত্ব
আমরা বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি। উপরের আলোচনা থেকে হয়তো এতটুকু বুঝতে পারছেন যে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ডিজিটাল টেকনোলজি বিশেষ অবদান রাখছে। চলুন আমরা এর গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে আছি তাহলে ডিজিটাল প্রযুক্তি কি এই সম্পর্কে আরো পরিষ্কার ধারণা হবে।
বর্তমানে বিভিন্নভাবে কাস্টমারের চাহিদা পরিবর্তন হচ্ছে কোনো কিছু সার্চ করা, শেয়ার করা থেকে শুরু করে প্রকৃত পণ্যের কেনাকাটা পর্যন্ত সর্বত্রই আমরা ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করছি। তাই কাস্টমারদের চাহিদার সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত তারা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে।
এছাড়া কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা বাড়াতে প্রতিনিয়ত তাদের ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করছে। যেহেতু ডিজিটাল প্রযুক্তির বড় একটি সুবিধা হলো সীমাহীন যোগাযোগ, তাই কোম্পানিগুলো দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও তাদের ব্যাবসা প্রসারিত করতে পারছে।
তাই বলা যায়, বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণই নয়, বরং এটি অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। কোম্পানিগুলোকে ডিজিটিলাইজড করার জন্য গুরুপ্তপূর্ণ একটি বিষয় হলো ডিজিটাল প্রযুক্তি। কোম্পানি ডিজিটিলাইজড করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, এর মধ্যে বড় একটি সুবিধা হলো মানুষের পরিবর্তে মেশিন ব্যবহার করে স্বল্প সময়ে অধিক কার্য সম্পন্ন করা। এর ফলে কোম্পানিগুলোর উৎপানশীলতা বৃদ্ধি পায়।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা
আজকাল প্রায় প্রতিটি ব্যবসাই প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির অনেক সুবিধাও আমরা ভোগ করছি। এবার আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি কি এর এই পর্যায়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করবো।
শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি
ডিজিটাল প্রযুক্তির যে কয়টি সুবিধা রয়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। যোগাযোগের এই উন্নতির ফলে মুহূর্তের মধ্যে আমরা বিশ্বব্যাপী মানুষের সাথে, টিমের সদস্যদের সাথে, ক্লায়েন্টের সাথে, বিনিয়োগকারী এবং সম্ভাব্য গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করতে পারি।
আমরা এখন ঘরে বসে বা আলাদা অফিসে বসেও দূরবর্তী মানুষের সাথে ভার্চুয়াল মিটিং করতে পারি স্কাইট, জুম বা গুগল মিটের মাধ্যমে। যার ফরে যে কাজগুলো করতে আমাদের কয়েকদিনের প্রয়োজন ছিলো সেগুলো আমরা এক মুহূর্তেই করে ফেলতে পারছি।
সামাজিক কানেক্টিভিটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা অতি সহজেই বন্ধুদের সাথে, পরিবারের সাথে, সহপাঠিদের সাথে, আত্নীয়-স্বজনদের সাথে কানেক্ট হতে পারি। এর ফলে আমরা দূরে থেকেও অনেক কাজ করে ফেলতে পারি এমনকি আমরা যদি বিদেশেও থাকি। আমরা অডিও, ভিডিওসহ অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারি।
বিভিন্ন ওয়েবসাইট, অ্যাপস এবং সফ্টওয়্যারগুলি ব্যবহারকারীদের সামাজিকীকরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় মেসেজিং, টেক্সটিং, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এবং মোবাইল ফোনের অর্থ হলো দুনিয়ার কারো থেকেই আপনি বিচ্ছিন্ন নন।
ব্যবহারকারীগন দৈনন্দিন ঘটনা বা নানা ধরনের খবরাখবর এখান থেকেই নিয়মিতভাবে আপডেট পেতে পারেন।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে বহুমুখী কাজ
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আজকাল কাজের ধরনও বদলে গেছে। এখন আমরা চাইলেই বাড়ি থেকে অনেক ধরনের রিমোট জব করতে পারি। অথবা অফিসের কোন ইমারজেন্সি কাজও আমরা বাসায় বসে সমাধান করে দিতে পারি অফিসে না গিয়েই।
এমন অনেকে আছে যারা বাংলাদশে বসেই আমেরিকা বেজড রিমোট জব করছে কোনো প্রকার অসুবিধা ছাড়াই।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন এবং এর সার্ভিসের ক্ষেত্রে ব্যপক দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন কর্মচারীদের তালিকা, তাদের বিভিন্ন কাজের রেকর্ড রাখা, বিভিন্ন কাজের ট্র্যাক রাখা এবং কোম্পানির খরচ কমানোর জন্যও ডিজিটাল প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই প্রযুক্তির ফলে কোম্পানিগুলো দ্রুত গ্রোথ করতে পারে।
দেখা যেতো কোম্পানির স্টাফরা আগে ম্যানুয়ালি বিভিন্ন কার্য সম্পন্ন করতো। কিন্তু এখন সফ্টওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের সময় সাশ্রয় হচ্ছে। এই সময়গুলো তারা প্রোডাক্ট উন্নয়নের কাজে বা যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে ব্যয় করতে পারে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে অটোমেশন সুবিধা
ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে মেশিনগুলিকেও স্মার্ট করে তুলছে। কিছু কিছু প্রযুক্তির ফলে মেশিনগুলি চালানোর জন্যও মানুষের প্রয়োজন হয়না, ফলে একজন কর্মী বার বার একই কাজ করা থেকে মুক্ত হতে পারে।
অটোমেশনের ফলে মেশিনেরর নিরাপত্তাও জোরদার হতে পারে যা একজন ব্যবহারকারীর জন্য স্বস্থির। বিভিন্ন অটোমেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বা সার্ভিস সহজলোভ্য হওয়ায় এর দামও কমে যায়।
ইনফরমেশন স্টোরেজ ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা অল্প জায়গায় অধিক পরিমাণ তথ্য স্টোর করতে পারি। অনেক বড় অ্যামাউন্ট মিডিয়া যেমন ইমেজ, মিউজিক, ভিডিও, কন্ট্র্যাক্ট ইনফরমেশন এবং অন্যান্য তথ্য মোবাইল ডিভাইসের মত ছোট ছোট ডিভাইসেও বহন করা যেতে পারে।
ফিজিক্যাল লোকেশনের পাশাপাশি অনলাইনেও স্টোর করা যেতে পারে, যা ইন্টারনেট অ্যাক্সেস রয়েছে এমন ডিভাইস থেকে অ্যাক্সেস করা যাবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে ট্রান্সপর্টেশন সুবিধা
বর্তমানে অনেক যানবাহনই ডিজিটাল প্রযুুক্তির উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে ট্রেন, বিমান এবং দূর পাল্লার বাস। আমরা এখন ঘরে বসেই ট্রেন, বিমান বা দূর পাল্লা বাসের টিকেট কাটতে পারি।
বিভিন্ন যানবাহন যেমন ট্রাক, বা গাড়ি আগামিতে সম্পূর্ণরূপে সয়ংক্রিয় হয়ে উঠবে। যেমন টেসলা কোম্পানির কিছু গাড়ি বর্তমানে সয়ংক্রিয়ভাবে ড্রাইভ করতে পারে। রাস্তা ফাঁকা থাকলে গাড়ির স্পিড বেড়ে যাবে আবার যদি আশেপাশে গাড়ি থাকে তখন স্পিড অটোমেটিকভাবে কমে যাবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে খরচ কমে যাওয়া
ইন্টারনেট প্রোভাইডার বা সিমের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্যাক কেনা ছাড়া ডিজিটাল বিশ্বে আমাদের যেসব সার্ভিস পেয়ে থাকি তার প্রায় বেশিরভাগই ফ্রি। কাওকে মেইল পাঠানো, ফ্যামিলি বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে অডিও ভিডিও কলে কথার বলার মত সার্ভিসগুলো আমরা ফ্রি ব্যবহার করে থাকি।
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিনোদন
অতীতে আমরা যেভাবে বিনোদন পেতাম বা আমাদের বিনোদনের মাধ্যম যা ছিলো ডিজিটাল প্রযুক্তি বা ইন্টারনেট আসার ফলে তা আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেমন আমরা বা আমাদের সিনিয়ররা মাঠে গিয়ে বিভিন্ন খেলাধুলা করতাম। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তি উন্নতির ফলে এখনকার ছেলেমেয়েরা মোবাইল বা কম্পিউটারে গেম খেলে সময় কাটায়।
রেডিওর পাশাপাশি টেলিভিশন সম্পচারও ডিজিটাইলাজড হওয়ার কারণে বিনোদনের মাধ্যমও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে ইন্টারনেট সহজলভ্যতার কারণে সোস্যাল মিডিয়া এবং ইউটিউবও বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাড়িঁয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে নিউজ
বর্তমানে অনেক মানুষ তারা অনলাইন পত্রিকা, সোস্যাল মিডিয়া এবং ইউটিউবের মাধ্যমে নিউজ পেয়ে থাকে। এমনকি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদগুলিও আমরা ইউটিউব বা ফেসবুকের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। দিনে দিনে খবরের উৎসের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে যার কারণে আগের চেয়ে দ্রুত আমরা খবর পেয়ে থাকি এবং এগুলি ২৪ঘন্টা অ্যাভেইলেবল।
ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের আর্থিক এবং ব্যাংকিং খাতে অনেক উন্নতি ঘটিয়েছে। প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং এর মত সিস্টেমও অনুমোদন পেয়েছে।
অনেক ব্যাংকই এখন অনলাইন সেবা প্রদান করছে। আমরা এখন ল্যাপটপ, ট্যাবলেট অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই ঘরে বসে ব্যাংকিং সেবা পেতে পারি। আপনি ঘরে বসেই আপনার ব্যালেন্স চেক বা কারো কাছে টাকা পাঠাতে পারবেন অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি
আমরা প্রত্যেকেই চাই মার্কেটে আমাদের ব্যবসা প্রতিযোগিতায় টিকে থাক এবং ভালো অবস্থানে থাকুক। ডিজিটাল প্রযুক্তি এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়েছে যা প্রতিটি কোম্পানি অন্যান্য কোম্পানি থেকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করে। তাই ব্যবসা টেকসই নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিটাল প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার কোম্পানির পারফরম্যান্স ট্র্যাক করতে পারে যা ব্যবহার করে আপনি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট বা AI এর মাধ্যমে আপনি ভবিষৎত মার্কেট সম্পর্কে একটা আইডিয়া পেতে পারেন যার ফলে আপনি আগম প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি
শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারের ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। আপনি হয়তো খেয়াল করছেন যে আপনি যেভাবে শিখছেন তা থেকে আপনার বাচ্চার শিখনের সিস্টেমটা একটু ভিন্ন।
যেহেতু আমাদের বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে তাই আমাদের আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতার জন্য প্রতিনিয়ত শিখনের মধ্যে থাকতে হয়। আমাদের এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার যা মূল্যবোধ, জ্ঞান এবং দক্ষতার বিকাশে সাহায্য করবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি আপনার সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সন্তান একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য, নতুন কিছু শেখার জন্য যতটা সম্ভব ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ভূমিকা পালন করে সেরকম কিছু নিচে উল্লেখ করা হলো:
ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শেখার ক্ষেত্র এখন শুধু শ্রেণীকক্ষেই নয় বরং যে কোন জায়গায় এবং যে কোন সময় শিখতে পারি
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন আমরা স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের অন্যান্য ছাত্র শিক্ষকের সাথেও সংযোগ হতে পারি
শেখার জন্য আমরা ইন্টারনেটে অ্যাভেইলেবল যেমন ওয়েবসাইট, অ্যাপস বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের সাপোর্ট নিতে পারি
আমরা ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে বা অন্যান্য প্রয়োজনে এমন কিছু শিখতে পারি যা আমরা স্কুল কলেজ বা স্থানীয় কারো কাছ থেকে শেখা সম্ভব না।
উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি
সাইবার অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির ফলে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের জন্য সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান তাদের অ্যাসেট ক্লাউড বা এন্ডপয়েন্টে স্টোর করে। তাই তাদের গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
এই ছিলো মোটামুটি ডিজিটাল প্রযুক্তি কি এই সম্পর্কিত আর্টিকেলটি। আশা করি আপনারা ডিজিটাল প্রযুক্তি কি এই সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
Very helpful article. Thank you