ইন্টারনেটকে মানবতার সেরা উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গত ১০ থেকে ১৫ বছরে এটি সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। একইভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার ও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যেসকল কারণে আমরা বলতে পারি যে ইন্টারনেট শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো। 

 

বর্তমান যুগে ইন্টারনেট মানুষের মৌলিক চাহিদার পর্যায়ে এসে পৌছেছে। ইন্টারনেটের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের জন্য অনেক সুবিধা রয়েছে। 

 

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার যদি বিবেচনা করি, তাহলে বলা যায় শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেট খুবই উপকারী। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য অনূরুপভাবে শিক্ষকদের জন্যও অনেক সুবিধা রয়েছে। 

 

আসলে ইন্টারনেট জ্ঞানের জগত হিসেবে পরিচিত। যেকোনো ধরনের বিষয়ই আপনি ইন্টারনেটে পেতে পারেন হোক সেটা আপনার একাডেমিক বা অন্যান্য বিষয়। 

 

ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট সার্চ করতে পারেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে গুগল, ইয়াহু এং বিং। 

 

তবে আমরা বাংলাদেশি হিসেবে গুগল সার্চ ইঞ্জিনটাই বেশি ব্যবহার করি। এটা সারা বিশ্বেই বহুল ব্যবহৃত একটি সার্চ ইঞ্জিন।

 

Table of Contents

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে, গবেষনা করতে বা কোনো বিষয়ে গভিরভাবে জানতে ইন্টারনেটের ভূমিকা অপরিসীম। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে আধুনিক যুগে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের অ্যাসাইনমেন্টসহ অন্যান্য যেকোনো সমস্যা তারা গুগলের মাধ্যমে সমাধান করে। 

 

ইন্টারনেটে প্রচুর পরিমাণে তথ্য রয়েছে এবং আমরা যেকোনো সময় চাইলে এসব তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারি। আমরা কলেজ বা ভার্সিটিতে ভর্তি থেকে শুরু করে একদম রেজাল্ট দেখা পর্যন্ত সবকিছুই ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। 

 

শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেটে বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের তাদের জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

 

এবার তাহলে চলুন শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে আসি:

 

ব্যয় সাশ্রয়

আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো এর উচ্চ খরচ। সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার বলেন, অনেক বাবা মা আছে যারা বলে, সন্তানকে স্কুলে দিয়ে কি হবে, তারচেয়ে কাজে পাঠায় তাতে কিছু উপার্জন হবে। 

 

ইন্টারনেট শিক্ষার মান উন্নত করে, যা একটি জাতীর মেরুদন্ড। এটি অনলাইন ক্লাস বা ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করে থাকে যা সবার জন্যই সাশ্রয়ী। 

 

ইন্টারনেটের আগে শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ের জন্য বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে দৌড়াতো এবং প্রচুর অর্থ ব্যয় করতো। এতে করে তাদের অনেক স্ট্রাগলের সম্মুখিন হতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে শেখা অনেক সহজ হয়ে গেছে।  

 

আমরা নিশ্চয় টেন মিনিট স্কুলের নাম শুনেছি। এটি আয়মান সাদিকের প্রতিষ্ঠা করা একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আজ হাজারো শিক্ষার্থী ফ্রি বা কম খরচে শিক্ষা অর্জন করতে পারছে।

 

সময় বাঁচায়

ইন্টারনেট শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বাঁচিয়ে দেয়। একজন শিক্ষার্থীর সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো তার সময়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য সময় প্রধান ভূমিকা পালন করে। 

 

ইন্টারনেটকে বলা হয় জ্ঞানের জগত। শিক্ষার্থীরা সহজেই ইন্টারনেটে তাদের পড়ার টপিক খুঁজে পেতে পারে। ইন্টারনেটের আগে শিক্ষার্থীদের প্রাসঙ্গিক কোনো উপকরণ খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন ছিলো। তারা হয়তো বিভিন্ন বই পড়তেন, হয়তো বইয়ের জন্য পাঠাগারে যেতে হতো অথবা শিক্ষকের সাহায্য নেবার দরকার ছিলো। 

 

কিন্তু এই সময়ে তাদের এই সমস্যায় আর পরতে হয়না। বর্তমানে তারা খুব সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা তাদের কাঙ্খিত তথ্য খুজে বের করতে পারে। এতে করে তার অনেক সময় সাশ্রয় হয়।

 

শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহজ যোগাযোগ

ইন্টারনেট আমাদের সবচেয়ে বেশি যে ক্ষেত্রে উপকার করেছে সেটা হলো, আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করে তোলা। এখন আমরা বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া, মেসেজিং অ্যাপস, চ্যাট ফোরামের মাধ্যমে শিক্ষকেরা তার শীক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেন।

 

বর্তমান সময়ে কোনো কলেজ বা ভার্সিটিতে ভর্তি হলেই দেখা যায়, শিক্ষক প্রথম ক্লাসেই বলে দেয় তোমরা নিজেরা একটি হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক গ্রুপ ‍খুলো। আমাকে সেখানে যুক্ত করো তাহলে আমি পরবর্তী ক্লাসের সকল তথ্য সেই গ্রুপে দিবো বা কোনো নোট দেবার দরকার হলে সেখানে দিয়ে দিবো। 

 

এই সকল গ্রুপের মাধ্যমে আমরা গুরুত্বপূণ তথ্য পেয়ে যাচ্ছি মূহুর্তেই। তাছাড়া ক্লাসের কোনো শিক্ষকের লেকচার যদি বুঝতে না পারে তবে তারা নিজেরা অনলাইনের মাধ্যমে বসে এটা সমাধান করতে পারে।

 

কার্যকরী শিক্ষা এবং শেখার টুলস

বর্তমানে ইন্টারনেট কার্যকরী শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। শিক্ষক তার ক্লাসের যাবতীয় নোট, সাজেশন সে একটি ওয়েবসাইট ফোরামে আপলোড করতে পারে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারে বা সরাসরি ব্যবহার করতে পারে। 

 

টিউটোরিয়াল ভিডিও বা নোট ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাটা আরো বৈচিত্রময় হয়ে উঠে। প্রয়োজনে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য পাওয়াপয়েন্ট স্লাইড, অ্যানিমেশন, বা বিভিন্ন ধরনের ইমেজ যুক্ত করে শিক্ষা দিতে পার। এসব টুলস এর কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয়তা বেড়েই যাচ্ছে।

 

মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ

শিক্ষার্থীরা ইউটিউব টিউটোরিয়াল, বা বিভিন্ন আর্টিকেলের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা বিনামূল্যে অ্যাক্সেস করতে পারে। বা নির্ভরযোগ্য কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ফি এর মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করতে পারে। 

 

শিক্ষকেরাও প্রয়োজনে অতিরিক্ত অধ্যায়নের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কোনো লেসন, কুইজ শিক্ষার্থীকে দিতে পারে। প্রয়োজনে শিক্ষকেরা তাদের লেকচার রেকর্ড করে রাখতে পারেন এবং পরবর্তীতে এটা শিক্ষার্থীদের রিভিশনের জন্য দিতে পারেন। এটা অবশ্যই নোট থেকে পড়ার চেয়ে ভালো কাজে দিবে।

 

ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তু খুঁজে বের করা

শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার আরেকটি কারণ হলো তারা যখন কোনো সমস্যায় পরে তখন সেই সমস্যার প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহ সহজেই ইন্টারনেট থেকে বের করে ফেলতে পারে। 

 

দেখা যায় ইন্টারনেট প্রসারের আগে ছোট্র একটা তথ্যের জন্য অনেক বই খুজতে হয়েছিলো বা স্যার/ম্যাডামের সাহায্য নেওয়ার দরকার হয়েছিলো যা ছিলো অনেক সময়ের ব্যাপার। 

 

কিন্তু বর্তমানে এটি অনেক দ্রুত এবং সহজ হয়ে গিয়েছে। অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক তথ্য দিয়ে রাখছে এমনকি বিভিন্ন ধরনের অ্যাসাইনমেন্টেও তারা সাহায্য করতে পারে।

 

ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষা

করোনাকালিন সময় থেকেই আমরা অনলাইন শিক্ষা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানতে পারছি। স্কুল কলেজ, ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেছিলো। তখন কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে পাঠদান অব্যাহত রাখছিলো। 

 

এখন প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীই অনলাইন শিক্ষা সম্পর্কে সচেতন, তারা করোনার সময় ভালো একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এই সময়। তারা বর্তমানে ঘরে আরামদায়ক পরিবেশে বসেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিখতে পারে। 

 

ক্লাসের পড়ায় যদি কোনো কনফিউজড থাকে বা কোনো টপিক বুঝতে না পারে তখন এটা অনলাইনের মাধ্যমেই শিখে ফেলতে পারে। 

 

বর্তমানে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ট্রেনিং সেন্টার অননাইনের মাধ্যমে কোর্স অফার করে। এতে যেমন খরচ কমছে তেমনিভাবে দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরাও এগুলো জয়েন করতে পারছে।

 

ক্যারিয়ার প্লানিং

ইন্টারনেটের আগে কোনো কিছু শেখার জন্য সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষ খুজে বের করা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক কঠিন ছিলো। কিন্তু ইন্টারনেট আসার পর শিক্ষার্থীদের জন্য এটা অনেক সহজ হয়ে যায়। 

 

সঠিক নির্দেশনা ছাড়া ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো ক্যারিয়ার প্লান সেট করা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সে ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে পারে। এখানে ভবিষ্যত লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনেক রিসোর্স রয়েছে, সে এখান থেকে তার প্লানিংটা সেট করতে পারে। 

 

এছাড়া তারা একটি ভালো ক্যারিয়ারের জন্য তারা বিভিন্ন এক্সপার্টদের কাছ থেকে ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং নিতে পারে।

 

নিজেকে আপ টু ডেট রাখা

সেল্ফ স্ট্যাডির ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। সেল্ফ স্ট্যাডির কারণেই শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ইন্টারনেট সেল্ফ স্ট্যাডির জন্য নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ টুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। 

 

এক্ষেত্রে গুগল, ইয়াহু, বিং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে সাহায্য করে। যদিও আমরা বাংলাদেশিরা বেশিরভাগ সময় গুগলকেই ব্যবহার করি কোনো কিছু সার্চ করার জন্য। যে কেউ ইন্টারনেট থেকে অনেক কিছু শিখতে এবং জানতে পারে। 

 

একটা বিষয় চিন্তা করেন যে গ্রামের একটি ছেলে পড়তে বসছে, কোনো একটা টপিক বুঝতে পারছেনা। তার বাড়িতে শিক্ষিত এমন কেউ নাই যে তাকে টপিকটা বুঝিয়ে দিবে। সেক্ষেত্রে কিন্তু একমাত্র ইন্টারনেটই পারে সাহায্য করতে। কেননা শিক্ষার্থীরা যে কোনো সময় তাদের ইন্টারনেটে তাদের কাঙ্খিত তথ্য সার্চ কতে পারে। 

 

ইউটিউব এবং অন্যান্য কিছু প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ক্লাস বা কোর্স অফার করে। ফলে তারা সহজেই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে শিখতে পারে।

 

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এর অসুবিধা

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এর যেমন অনেক অনেক সুবিধা রয়েছে তেমনিভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এর কিছু অসুবিধা ও রয়েছে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য ইন্টারনেট অ্যাক্সেস এর অনেক অসুবিধা রয়েছে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো:

 

শিক্ষার্থীরা বাইরের কার্যকলাপ এড়িয়ে চলছে

শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্যই ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করছে কিন্তু এক পর্যায় দেখা যায় এই উদ্দেশ্য থেকে তারা দূরে সরে যায়। ইন্টারনেটে পাপ্ত বিনোদনের মধ্যে তারা ডুবে যায়। পরবর্তীতে দেখা যায় তারা ইন্টারনেট আসক্ত হয়ে পরছে। 

 

পরবর্তীতে দেখা যায় শারীরিক ব্যায়াম বা বাইরে খেলাধুলার অভাবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রোগের দিকে ঠেলে দেয়। এগুলো ছাড়াও দেখা যায় সারাদিন কম্পিউটার বা মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকার কারণে তাদের ঘাড়, কাধ বা চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

 

ইন্টারনেটে অ্যাক্সেসযোগ্য অনেকগুলো গেম রয়েছে যেটাতে আসক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যায়। যেমন ফ্রি-ফায়ার বা পাবজির মত গেম। এছাড়া অনেক ইন্টানেট গেমে ভায়োলেন্স অন্তভূক্ত থাকে যা শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

যোগাযোগ করার ক্ষমতা হাড়িয়ে ফেলছে

ইন্টারনেট বিভিন্ন উপায়ে মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে, তেমনিভাবে জীবনকে সহজ করতে গিয়ে মানুষ তার জীবনের বেসিক কিছু বিষয় সে ভুলে যাচ্ছে। যেমন যোগাযোগ করার ক্ষমতা। 

 

বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় জড়িয়ে পরছে। সেখানে অসংখ্য বন্ধু বান্ধবীদের সাথে যোগাযোগ করছে, চ্যাটিং করছে। এসবই হচ্ছে ভার্চুয়ালি। 

 

তারা অনলাইনে যোগাযোগ করতে করতে এতটা অভ্যস্থ হয়ে পরে যে সরাসরি যোগাযোগ করা তার জন্য কঠিন হয়ে পরে।

 

ইন্টারনেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয়

কিছু শিক্ষার্থী ইন্টারনেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে থাকে। দেখা যায় যে তারা হয়তো প্রথমবার শিক্ষার কোনো একটা কাজেই ইন্টারনেটে প্রবেশ করে, পরবর্তীতে তারা অন্যান্য দিকে মুভ করে তাদের অজান্তেই। ইন্টারনেটে কাটানো সময় সম্পর্কে তারা সচেতন হতে পারেনা। 

 

এরপর যদি সিনেমা দেখার অভ্যাস থাকে তাহলে এটাও তার অনেক সময় নষ্ট করে দেয়। অতিরিক্ত মুভি দেখা, নাটক দেখা, সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহাররের কারনে সে ধীরে ধীরে পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যেতে থাকে।

 

স্বাস্থ্যের অবনতি

শিক্ষার্থীকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই তাকে কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহার একসময় তার ঘাড় ব্যথা, পিঠে ব্যথা, চোখের সমস্যার কারণ হয়ে দাড়ায়। 

 

বিশেষ করে স্মার্ট ডিভাইস থেকে নির্গত রশ্মি তার চোখের বিভিন্ন রোগের কারণ হিসেবে পরিচিত। যেসব শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করে তাদের দৃষ্টি জনিত সমস্যার মত চোখের বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে।

 

প্রাইভেসি ইস্যু

ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে অবশ্যই আমাদের ইন্টারনেট সিকিউরিটি বা সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। নতুবা যেকোনো বিপদ চলে আসতে পারে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীই ইন্টারনেটের বিভিন্ন পরিষেবা বিনামূল্যে গ্রহন করে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষার্থীরা তাদের তথ্য নিয়ে হুমকির মুখে পরে। 


হ্যাকাররা ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার বা মোবাইলে প্রবেশ করে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে। পরবর্তীতে তাদের বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করে। শিক্ষার্থীদের তোলা অনেক গোপনীয় ছবি বা ভিডিও একসময় সোস্যাল মিডিয়ায় বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল করে দেওয়া হয়। একসময় দেখা যায় শিক্ষার্থী এসব অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে বসে।


এটি শিক্ষার্থীদের উপর হওয়া সবচেয়ে মারাত্মক বিষয়। দেখা যায় শিক্ষার্থীরা নিজেরাই একে অপরকে ধমক বা ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এটা হয়ে থাকে। ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে সাইবার বুলিং বা সাইবার অপরাধও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। 

 

এসব অনলাইন জালিয়াতি, চিটিং, এবং সাইবার বুলিং শিক্ষার্থীদের জীবনের ব্যপক ক্ষতি করে। ইন্টারনেট অপব্যবহারের কারণে অনেক শিক্ষার্থী সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়। অনেক শিক্ষার্থী সাইবার বুলিংয়ের ফলে আত্মহত্যাও করে। 

 

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার যেমন আমাদের অনেক উপকার করছে, তেমনিভাবে এটি ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকে মৃত্যু মুখেও পতিত হচ্ছে তাই আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

 

অশ্লীলতা

শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় অনেক ধরনের অশ্লীলতার সম্মুখিন হতে পারে, যেমন কোনো ভায়োলেন্স বা পর্ণগ্রাফি। যদিও এসব ওয়েবসাইটগুলো তাদের ব্যবহারকারী ১৮বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্য রাখে, কিন্তু তাদের ব্যবহারকারির বয়স যাচাই করার নির্ভরযোগ্য কোনো উপায় নেই। তাই অপাপ্তরাও সহজে এগুলো অ্যাক্সেস করতে পারে। এগুলোর কারণে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচত প্রভাব পড়ে। 

 

এই ছিলো শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কিত আর্টিকেলটি। আমরা আলোচনা করলাম শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার, শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এর সুবিধা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এর অসুবিধাসমূহ নিয়ে। 

 

আশা করি আপনারা শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এর সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।