তথ্য প্রযুক্তি

ডিজিটাল কনটেন্ট কি? ১৪ টি বিভিন্ন প্রকারের ডিজিটাল কনটেন্ট

আপনি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ছেন তার মানে আপনার ইন্টারনেট সম্পর্কে মোটামুটি অথবা ভালো ধারণা আছে। আপনার হয়তো ফেসবুক, ইনস্ট্রগ্রাম বা অন্য কোনো সামাজিক মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টও আছে। আর এগুলি থাকা মানেই আপনার কনটেন্ট সম্পর্কে ইতিমধ্যে ধারণা রয়েছে। এবার চলুন আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি যে ডিজিটাল কনটেন্ট কি? তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক কনটেন্ট জিনিসটা আসলে কি।


কনটেন্ট কি

কনটেন্ট হলো কোনো বিষয়ের উপর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার একটি প্রক্রিয়া। এটা আসলে যে কোনো বিষয় হতে পারে। আমরা যখন কোনো ওয়েবসাইট বা ইউটিউবে প্রবেশ করি তখন আমাদের সামনে যা কিছু স্কিনে আছে তার প্রত্যেকটিই কিন্তু কনটেন্ট। 


আপনি গুগলে গিয়ে যদি আম লিখে সার্চ করুন দেখবেন নিচে অনেকগুলি টাইটেল, ছবি এবং ভিডিও আসবে। এগুলো সবই কিন্তু কনটেন্ট কেউ না কেউ আমের উপর এসব কনটেন্ট তৈরি করেছে বিধায়ই আমরা দেখতে পারছি।


ডিজিটাল কনটেন্ট কি

ডিজিটাল কনটেন্ট এমন এক ধরনের মিডিয়া টাইপ যা একটি প্রতিষ্ঠানের ভিজিটর, কাস্টমার অথবা ব্যবহারকারীর সাথে সম্পর্ক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 

অন্যভাবে যদি বলি তাহলে বলা যায় ইন্টারনেটে সংরক্ষিত সকল তথ্য সামগ্রীকেই ডিজিটাল কনটেন্ট বলা যায় যা একজন ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্রাউজ করে অ্যাক্সেস করতে পারে। অর্থাৎ একটি কনটেন্ট এর ডিজিটাল রূপ। 


তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আমরা ডিজিটাল কনটেন্টকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার হতে দেখি। একজন ভিজিটরকে ধরে রাখতে বা আকৃষ্ট করতে প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যাপভাবে ডিজিটাল কনটেন্ট এর উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। এবং প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করে তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে এবং সফলও হচ্ছে।

 

ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার ও কি কি

এবার আমরা জানার চেষ্টা করবো ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার ও কি কি। এখানে আমরা ১৪ ধরনের ডিজিটাল কনন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি সম্পূর্ণ পড়লে আপনি ডিজিটাল কনটেন্ট কি এ সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

 

ইনফো্গ্রাফিক্স

ইনফোগ্রাফিক্স হলো ডাটা এবং ইনফরমেশনের একটি ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা যা একজন পাঠকের কাছে কঠিন বিষয়বস্তুকেও সহজ করে তোলে। এতে করে একজন পাঠক জটিল বিষয়বস্তুকে অতি সহজে বুঝতে পারে। এটি গ্রাফিক্স বা চার্ট যে কোনো বিষয়ের ওভারভিউ দেয়। 

 

একটি কনটেন্ট এর মধ্যে যদি একটি ইমেজ ব্যবহার করা হয় তবে কনটেন্টটি যেমন আকর্ষণীয় হয় তেমনিভাবে অনেক বড় গল্পকেও ইমেজের মাধ্যমে ছোট করে বোঝানো যায়।

 

মিমিস

আপনাদের অনেকেরই হয়তো মিমিস সম্পর্কে ধারণা আছে। মিমিস হলো ফানি টেক্সট সহ ইমেজ বা ভিডিও যা জনপ্রিয় সংস্কৃতিকে নির্দেশ করে। সাধারণত এসব ছবি বা ভিডিওতে মানুষের আগ্রহ অনেকটা বেশি জন্মায়। 

 

এগুলি সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য এবং পাঠকদের কাছে দ্রুত পৌছায়, এরফলে আপনার কনটেন্ট প্রচারের হাতিয়ায় হয়ে ওঠে। পাঠকবর্গগন সাধারণত মিমিসগুলিকে অন্য কনটেন্ট এর সাথে রিইউজ করে ফলে এটিতে নতুন অর্থ প্রকাশ পায়।

 

লং-ফর্ম

লং ফর্ম কনটেন্ট বলতে সাধারণত একটি বিষয়ের উপর বিস্তারিতভাবে কনটেন্ট লিখাকে বোঝায়। কনটেন্ট এর আকার নির্ভর করে বিষয়, উদ্দেশ্য, শ্রোতা বা পাঠক এবং সুযোগের উপর। লং ফর্ম লিখতে গেল অবশ্যই ভালোভাবে গবেষনা করে পাঠক বা শ্রোতাদের জন্য শিক্ষামূলক এবং মূল্যবাদন সামগ্রী তৈরি করা উচিত। 

 

এগুলি এমনভাবে তৈরি করা উচিত যেন পাঠকেরা যেন সহজেই বিষয়টি বুঝতে পারে। সঠিকভাবে যদি একটি লং ফর্ম তৈরি করা যায় তবে এটি সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে এবং সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার বাড়াতে সাহায্য করবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক একটি লং ফর্মের মধ্যে কি কি থাকা উচিত।

 

  •  নির্দেশিকা: একটি নির্দিষ্ট কাজ কিভাবে সম্পন্ন করতে হয় তা ব্যাখ্যা করুন। 

  • লিস্ট: একজন পাঠক আপনার এই কনটেন্ট থেকে কি শিখতে পারবে তার একটি লিস্ট দিন।

  • গাইড: ডাউনলোডযোগ্য ফাইলের রিসোর্স শেয়ার করা যেন পাঠক তার সমস্যাটি সমাধান করতে পারে।

  • কেস স্টাডি: এমন কিছু লিখতে পারেন যেখানে একটি সমস্যা নির্দেশ করা হয়েছে এবং তার সমাধান দেখানো হয়েছে।

ব্লগ সাইট

ব্লগ এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে কোনো ব্যক্তি কোনো বিষয়ের উপর পোস্ট বা আর্টিকেল লিখে থাকে। এখানে একজন ব্লগার চেষ্টা করে সহজ সরলভাবে তার পোস্টটি লিখতে যেন পাঠক তা সহজেই বুঝতে পারে। 

পাঠকদের চাহিদা মেটাতে ব্লগগুলি ইনফোগ্রাফিক্স এবং পরিসংখ্যানসহ ডাটা সংযুক্ত করে থাকে। একজন ব্লগার তার ওয়েবসাইটকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে পারে যেখানে সে তার পাঠকদের সাথে ভালো একটি সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।

 

ডিজিটাল কনটেন্ট হিসেবে ইমেজ

ছবি হলো একটি বিষয়ের বা বস্তুর ফিজিক্যাল এবং ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা। ছবির মাধ্যমে বিষয়বস্তুকে আরো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা যায়। এতে করে একজন পাঠক অতি সহজেই বিষয়বস্তুকে বুঝতে পারে। এখানে বিভিন্ন ধরনের ছবি সংযুক্ত করা যেতে পারে যেমন মিমিস, ছবি, জিআইএফ এবং কমিকস।

 

নিউজলেটার

নিউজলেটার হলো একটি ফ্লায়ার-টাইপ ফরম্যাট যেখানে একটি ব্র্যান্ড বা কোম্পানির সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং খবর থাকে। তারা গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে থাকে। নিউজলেটারগুলি ব্যবসায়িক পণ্য এবং সার্ভিস প্রচারের জন্য সহায়তা করে। 

 

এটি সাধারণত ব্র্যান্ড ইক্যুইটি এবং শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করতে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। ব্র্যান্ডগুলি সাধারণত তাদের  কাস্টমারদের আপডেট করতে এবং মূল্যবান তথ্য সরবারহ করতে নিউজলেটার ব্যবহার করে।

 

অডিও

অডিও কনটেন্টকে এক কথায় ইন্টারনেট রেডিও বলে উল্লেখ করা যেতে পারে, যেটি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ফোকাস করে তৈরি করা হয়। এটি যোগাযোগের একটি প্যাসিভ ফর্ম যা শ্রোতারা অন্য কাজ করার সময়ও শুনতে পারে। 

 

ব্যবহারকারী মোবাইলফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে এসব অডিও কনটেন্ট অ্যাক্সেস করতে পারে। প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীগন অডিও শুনতে বা ডাউনলোড করতে পারে। 

ব্যবসায়ীকগন সাধারণত তাদের পণ্য বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন দিতেও অডিও কনটেন্ট ব্যবহার করে। এটি একটি ব্লগের মধ্যে হতে পারে বা ইউটিউবেও হতে পারে এক্ষেত্রে কভার ছবিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিছু অডিও কনটেন্ট এর প্রকারভেদ নিচে উল্লেখ করা হলো:

 

পডকাস্ট: এক বা একাধিক ব্যক্তি যখন কোন বিষয়ের উপর ফোকাস করে অডিও কনটেন্ট তৈরি করে তাকেই সাধারণত পডকাস্ট বলে। 

 

ইন্টানেট রেডিও: এটি একটি অনলাইন অডিও স্ট্রিম যা একটি নির্দিষ্ট বিষয়গুলিতে ফোকাস করে সম্প্রচার করা হয়। 

 

জিঙ্গেল: এটি একটি শর্ট টিউনস যা ব্র্যান্ড বা বিজ্ঞাপনে ব্যবহারের ছোট টিউন। 

 

অডিও গ্রাম: এটি সোস্যাল মিডিয়ার সম্ভাব্য শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অডিও ক্লিপের ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা। 

 

অডিও ব্লগ: এটি সাধারণত ব্র্যান্ড সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করার ভয়েস রেকর্ডিং।

 

ই-বুক

বর্তমান সময়ে যারা কম্পিউটার বা মোবাইল নিয়ে ভালো ধারণা আছে তারা নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন ই-বুক সম্পর্কে। ই-বুক হল ইলেকট্রনিক বই যাতে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিস্তারিতভাবে তথ্য থাকে। 

 

এগুলি চাইলে আপনি ডাউনলোড করে পড়তে পারেন, এটি সাধারণত pdf, mobi এবং epub এর মত ফরম্যাটে পাওয়া যায়। ই-বুকগুলি সাধারণত সুর্শঙ্খলভাবে সাজানো হয়ে থাকে যাতে পাঠকেরা অতি সহজে বুঝতে পারে। 

 

এগুলি খুব ভালোভাবে ফরম্যাট করা থাকে যেমন এতে বুলেট, সংখ্যা এবং তালিকা ব্যবহার করে কনটেন্টটাকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয় যাতে পাঠকের একঘেয়েমি না আসে। বর্তমানে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনেক জনপ্রিয় বইও ফ্রি ডাউনলোড করে পড়তে পারেন, যা ফিজিক্যালি ক্রয় করে পড়তে গেলে অনেক খরচ হতে পারতো।

 

পেপারস

পেপারস হলো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর গভীর এবং প্রামাণিক রিপোর্টস। এগুলি পাঠকদের পড়ার সুবিধার জন্য ক্যাটাগরি অনুযায়ী বিভিন্ন সেকশনে ভাগ করা হয় এবং একটি সুচিপ্রত্রের মত লিস্ট থাকে। যেখান থেকে পাঠক খুব সহজেই তার প্রয়োজনীয় বিষয় বাছাই করে পড়তে পারে। 

 

পেপারগুলি সার্ভিস এবং পণ্য সম্পর্কে আরো গভির তথ্য প্রদান করতে পারে, যাতে একজন ক্লায়েন্ট পণ্য সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে বুঝতে পারে। এতে করে তার সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রেও উপকার হয়। 

 

এই পেপারগুলি জরীপকৃত ডাটা ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় গবেষণার করে তৈরি করা হয়। এটি সাধারণত একটি কোম্পানির দক্ষতা প্রদর্শন করতে এবং বিনিয়োগকারিদের মন জয় করতে এটি ব্যবহার করে থাকে।

 

সোস্যাল মিডিয়া পোস্ট

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট হলো ব্যবহারকারি ফেসবুক, ইনস্ট্রগ্রামের মত সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার  করে তার প্রোফাইলে শেয়ার করা বিষয়বস্তু। অনেকে সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং করে থাকে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটিং খুব জনপ্রিয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য থাকতে পারে যেমন টেক্সট, ইমেজ, অডিও অথবা ভিডিও।

 

ডিজিটাল কনটেন্ট হিসেবে টেমপ্লেট

টেমপ্লেট হল পূর্ব-নির্মিত ডকুমেন্টস যা নিদিষ্ট সম্পর্কে তথ্য রিলে করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলিতে একটি আউটলাইন রয়েছে  যা একটি ব্লগ পোস্ট, ওয়েবপৃষ্টা এবং নিবন্ধনের জন্য সমস্ত তথ্য এবং চিত্রগুলিকে কাভার করে। একটি ব্র্যান্ড বা ব্যবসার বিস্তারের জন্য টেমপ্লেটগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

ব্যবহারকারীদের তৈরি করা কনটেন্ট

ব্যবহারকারীদের তৈরি করা কনটেন্ট হলো এমন এক ধরনের কনটেন্ট যা একটি ব্যাবসা বা ব্র্যান্ডের গ্রাহকরা সামাজিক প্ল্যাটফর্মে তৈরি করে এবং প্রকাশ করে। তারা একটি পণ্যর সার্ভিস সম্পর্কে ব্লগ পোস্ট ভিডিও বা ছবি যুক্ত করতে পারে। 

 

তারা চমৎকারভাবে সামাজিক প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। এতে করে অন্যগ্রাহকদের এই প্রোডাক্ট সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা হয়। যেমন আপনি একটি স্যামসাং ফোন কিনবেন বলে ভাবছেন তখন আপনি ‍স্যামসাং এর ফেসবুক গ্রুপে গিয়ে দেখে নিতে পারেন যে এই ফোন কেউ ব্যবহার করছে কিনা। 

আর ব্যবহার করলে তার এই ফোন সম্পর্কে ধারণা কি। 

 

অথবা আপনি নিজেই এই ফোন সম্পর্কে জানতে চেয়ে পোস্ট করতে পারেন। এতে করে যারা এই ফোনটি ব্যবহার করে তারা হয়তো তাদের রিভিউ জানাবে।

 

জিআইএফ

জিআইএফ হলো একটি ইমেজ ফাইলের কমপ্রেসড ফরম্যাট। এটি টেলিভিশন, মুভি এবং ভিডিও থেকে ক্লিপ কাট অংশ হতে পারে। জিআইএফ সাধারণত অ্যানিমেটেড হয় এবং অনেকগুলি ছবির একত্রিত একটি ফাইল হয়ে থাকে।

 

ডিজিটাল কনটেন্ট কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

এতক্ষণে নিশ্চয় ডিজিটাল কনটেন্ট কি এই সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছেন। এখন একটু জেনে নেওয়া যাক এটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে আপনি আপনার অডিয়েন্স এর নিকটে পৌছাতে পারবেন যা অন্য কোনো মিডিয়ার মাধ্যমে সম্ভবপর হয়না। অনলাইনে অনেক বেশি তথ্য থাকে, তাই উচ্চ মানের কনটেন্ট এখন আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এর মাধ্যমেই আপনি অডিয়েন্সকে ধরে রাখতে পারবেন। 

 

নতুন কাস্টমারদের কাছে পৌছাতে বা ব্যবসা বাড়াতে ডিজিটাল কনটেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্লগারদের উচিত নতুন পাঠকদের আকৃষ্ট করতে এবং পুরাতনদের ধরে রাখতে মানসম্পন্ন ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা।

 

কেন মানসম্পন্ন কনটেন্ট প্রয়োজন

যখন ডিজিটাল কনটেন্ট কি এর প্রসঙ্গ আছে তখনই যে বিষয়টি উঠে আসে তা হলো এর কোয়ালিটি। ইন্টারনেট হলো তথ্য প্রযুক্তির ভান্ডার, যেখানে আপনার কনটেন্টটি সবার নজরে আনার জন্য আপনাকে অডিয়েন্সকে বোঝাতে হবে যে আপনার কনটেন্ট এ মূল্যবান কিছু আছে। 

 

আপনি যদি একটি ইনফ্রোগ্রাফিক তৈরি করতে চান, একটি ব্লগ পোস্ট লিখতে চান বা একটি ভিডিও তৈরি করতে চান তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই একটি উদ্দেশ্য মাথায় রেখে কাজ শুরু করতে হবে। 

 

বর্তমানের সময় অনুযায়ী রেডিও, টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রের মত ঐতিহ্যবাহি মিডিয়া পরিমান দিন দিন কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে বলা যায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংক্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এখন মানুষের মধ্যে টাকা দিয়ে পত্রিকা ক্রয় করে পড়ার চেয়ে অনলাইনে পত্রিকা পড়তেই বেশি আগ্রহ দেখা যায়।

 

ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করার সময় কি করবেন আর কি করবেন না

আপনারা হয়তো অনেকেই ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করার বিষয়ে ভাবছেন। সেক্ষেত্রে কিছু বিষয় অবশ্যই আমাদের জেনে রাখা উচিত। এর মাধ্যমে ডিজিটাল কনটেন্ট কি এটিও যেমন পরিষ্কার হবে আবার এটি ব্যবহার করে সুন্দর কনটেন্টও তৈরি করতে পারবেন। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক-

কি করবেন-

 

  1. কনটেন্ট তৈরি করার সময় একটি উদ্দেশ্য মাথায় রেখে কনটেন্ট তৈরি করুন।

  2. নিশ্চিত করুন যে কনটেন্টটি উচ্চ-মানের এবং আকর্ষনীয়

  3. কনটেন্ট তৈরি করে আপনার টারগেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌছান এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী কনটেন্ট তৈরি করুন।

  4. আপনার কনটেন্টটি শেয়ার করতে সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য অনলাইন চ্যানেল ব্যবহার করুন। 

  5. কনটেন্ট তৈরি করার আগে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট যেমন টেক্সট, ছবি, অডিও এবং ভিডিও নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন।

  6. আপনার অডিয়েন্স এর ফিডব্যাক ট্র্যাক করুন এবং কনটেন্ট উন্নত করতে এটা ব্যবহার করুন। 

  7. আপনার কনটেন্ট এর রিচ বাড়াতে অন্যদের সাথে মেসেজের মাধ্যমে কনটেন্ট শেয়ার করুন।

 

কি করবেন না

 

  1. ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করার সময় যেটি থেকে সব বিরত থাকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো কারো কনটেন্ট কপি করে নিজের বলে চালিয়ে নেওয়া। কপি করা শুধুমাত্র ভুলই নয় বরং এটি একধরণের অপরাধও। 

  2. পারফেক্ট হবার চেষ্টা করবেন না। সবচেয়ে সফল ব্লগার বা উদ্যোক্তারাও জানেন যে এটি প্রথম চেষ্টাতে সম্ভব নয়। তাই সফল হওয়ার জন্য দরকার ধৈর্য্য এবং অনুশীলন। লেগে থাকুন আশা করা যায় সফল হবেন।

  3.  অটোমেশন টুলের উপর খুব বেশি নির্ভর করবেন না যেমন, অটোরেসপন্ডার, অটো ভিজিটর। চেষ্টা করবেন অর্গানিকভাবে ভিজিটর নিয়ে আসতে। 

  4. দুর্দান্ত কিছু তৈরি হতে হয়তো অনেক সময় লাগতে পারে, এটি দেখে হতাশ হবেন না। কনটেন্ট তৈরি একটি চলমান পক্রিয়া হওয়া উচিত যার জন্য ধৈর্য এবং অধ্যবসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

  5. কখনই প্রথম চেষ্টার পরে হাল ছাড়বেন না। তাই এটি চালিয়ে যান, যতক্ষণ না সফলতা খুঁজে পান।

 

একজন ডিজিটাল কনটেন্ট রাইটারে প্রধান দায়িত্বগুলি কি

 

  1. একজন ডিজিটাল কনটেন্ট রাইটারের প্রধান কাজ হওয়া উচিত তাকে অন্যান্য কনটেন্ট বা বিষয়টা নিয়ে গবেষণা করা। এতে করে সে ঐ বিষয়টির উপরে আরো অনেক তথ্য পাবে এবং জরুরী কোন তথ্য সে প্রদান করতে পারবে। 

  2. বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করা। হতে পারে ব্লগ, সোস্যাল মিডিয়া পোস্ট বা ইউটিউব ভিডিও।

  3. কনটেন্ট তৈরি করার সময় তার অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন প্রয়োজন যেন অর্গানিক ভিজিটর পাওয়া যায়।

  4. কনটেন্ট তৈরির সময় অবশ্যই কোয়ালিটি, স্পষ্টতা, ব্যাকারণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। 

  5. নির্দিষ্ট গাইডলাইন অনুসরণ করে কনটেন্ট তৈরি করা উচিত। যেন কনটেন্ট এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।

 

পরিশেষে

তাহলে আপনি বুঝতেই পারছেন একটি মানসম্পন্ন ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা ইউটিউবে যেকোনো একটি ভিডিও রেকর্ড করার মত সহজ নয়। দুর্দান্ত সব ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করতে প্রয়োজন হবে সময়, ধৈর্য এবং পরিকল্পনা। তাই বলা যায় লেগে থাকুন সফল হোন। 

 

আশা করি আমার এই ডিজিটাল কনটেন্ট কি আর্টিকেল থেকে ডিজিটাল কনটেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছেন। এতক্ষন ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *